জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর
ফরিদপুরের মধুখালীতে নিখোঁজের চারদিন পর এক ধনাঢ্য যুবককে প্রেমিকাসহ কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করেছে পুুলিশ। বিশ্ব সাহা (২২) নামে ওই যুবক ও প্রেমিকা লাবনী খাতুন নওপাড়া ডিগ্রী কলেজের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। দুজনের ধর্মবর্ণ ভিন্ন হওয়ায় পার্লিয়ে বিয়ে করেও তারা একসাথে থাকতে পারেনি। প্রেমিক যুবকের ধনাঢ্য বাবার হস্তক্ষেপে পুলিশ মুচলেকা দিয়ে তাদেরকে নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছে।
পুলিশ জানায়, মধুখালী পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বৈকুন্ঠপুরের বাসিন্দা রডসিমেন্টের ব্যবসায়ী ও ইটা ভাটা মালিক সুজিত সাহা গত ৭ জুন তার ছেলে বিশ্ব সাহা (২৩) নিখোঁজ হয়ে গেছে মর্মে মধুখালী থানায় একটি জিডি করেন। তিনি জানান, সকালে তার ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। বিশ্ব সাহা নওপাড়া কলেজের ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র। তার পিতা মধুখালীর ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হওয়ায় পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ঘটনা তদন্তে মাঠে নামে। খোঁজখবর নিয়ে পুলিশ জানতে পারে বিশ্ব সাহার সাথে তার একই কলেজের সহপাঠী লাবনী খাতুনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। এরপর তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের সন্ধান পায় এবং নিজস্ব উপায়ে অবস্থান সনাক্ত করে। এরপর শুক্রবার রাতে তাদের দুজনকে কক্সবাজারের হোটেল সিফাতের একটি কক্ষ থেকে আটক করা হয়।
জানা যায়, পুলিশে আটকের আগেই লাবনী ধর্মান্তরিত হয়ে বিশ্বকে বিয়ে করে। লাবনীর সিথিতে সিদূর মাখা একটি ছবিও উদ্ধার হয়। লাবনীর বাবা ফজলু শেখ একজন সাধারণ কৃষক। দুই মেয়ের মধ্যে লাবনী ছোট। বিশ্বর বাবা বিষয়টি মেনে না নেয়ায় পুলিশের মধ্যস্ততায় বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি জানতে বিশ্ব সাহার বাড়িতে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাবা সুজিত সাহা ঘটনা এড়িয়ে যেয়ে জানান, তার ছেলে বিশ্ব রাগ করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। তাকে খুঁজে না পেয়ে থানায় জিডি করেছিলাম। এরপর মাওয়া ঘাট থেকে মধুখালী থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। আর কথা প্রসঙ্গে বিশ্বর পিসিমা জানান, আমাদের ঝামেলা মিটে গেছে। মেয়ের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়েছে এজন্য।
এ বিষয়ে জানতে লাবনীর বাড়িতে গেলে তার বড় বোন রাবেয়া বলেন, একটু জামেলা হয়েছিলো। সেটিা আমরাই মিটমাট করে নিয়েছি। কাজেই আর ঝামেলায় জড়াতে চাচ্ছিনা। অবশ্য টাকার বিনিময়ে প্রেমিক-প্রেমিকার ছাড়াছাড়ির বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেনি পুলিশ।
মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম বলেন, ছেলের বাবার জিডির সূত্র ধরে তাদের সন্ধান চালিয়ে দুজনকেই কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর কক্সবাজার থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাদের মধুখালীতে ফিরিয়ে আনা হয়।
এদিকে, চারদিন নিখোঁজ থাকার পরে মোটা অংকের টাকায় বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার খবরটি মধুখালীতে টক অব দ্য মধুখালীতে পরিণত হয়।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply