জিল্লুর রহমান রাসেল, ফরিদপুর
ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চার ইউনিয়নে সংঘবদ্ধভাবে এক গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য মিমাংসা করার পায়তারা চলছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। ঘটনাটি গত ২৯ জুন বিকেলে সদরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের পিঠাকুমড়া বাজার এলাকায় ঘটেছে। ধর্ষিতা ঐ গৃহবধু মাচ্চর ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামের এক অটোচালকের স্ত্রী। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে ধর্ষকেরা পালিয়ে থেকে এলাকার দুইজন প্রভাবশালী ব্যক্তির মাধ্যমে ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মিমাংসা করতে চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানা গেছে।
রবিবার (০৩ জুলাই) বিকেলে সরেজমিনে গেলে ফরিদপুর জজ কোর্টের শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিচয়ে শিবরামপুর গ্রামের রিপনসহ স্থানীয়রা এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২৯ জুন বিকেলে ধর্ষিতা ঐ গৃহবধু পাশ্ববর্তী পিঠাকুমড়া বাজার থেকে ফেরার পথে তিন যুবক জোড়পূর্বক রাস্তার পাশে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে। অভিযুক্ত ঐ তিন যুবক শিবরামপুর গ্রামের ওমর আলীর ছেলে আমিরুল (২২), মৃত হিরু শেখের পুত্র নাহিদ শেখ (২৪) এবং চকফতেপুর গ্রামের হুমায়ন খন্দকারের পুত্র তামিম খন্দকার (২৫)। পরবর্তীতে ঘটনাটি তার স্বামীকে জানানোর পর ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে ভিকটিমকে বাড়িতে পাওয়া না গেলে মুঠোফোনে তার স্বামী বিষয়টি স্বীকার করেন এবং বলেন, ঘটনার সাথে আমিরুল ও নাহিদ সরাসরি জড়িত এবং তামিম সহযোগিতা করেছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, আমি এখন ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে আছি, থানায় গিয়ে মামলা করবো। তারপর আমার স্ত্রীকে নিয়ে আপনাদের সাথে দেখা করে সম্পূর্ণ বিষয়টি খুলে বলবো। এরপর ঘটনাটি জানতে রাতে ফোন দিলে জানান, এখন থানায় আছি, সকালে জানাবো। সকালে ফোন দিলে বলেন, ভাই আমি একটু দৌড়ের উপর আছি।
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্তরা ১০/১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল রয়েছে। যারা প্রত্যেকে নেশা করে। এদের দ্বারা আগেও এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটেছে কিন্তু তারা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পার পেয়ে গেছে। এই ন্যাক্কারজন ঘটনাটিও ধামাচাপা দেয়ার জন্য শিবরামপুর গ্রামের সেলিম হাওলাদার এবং মাচ্চর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বর শের আলম শের শাহ্ ভিকটিমের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং ২/৩ লাখ টাকার প্রলোভন দেখিয়ে মিমাংসার পায়তারা করছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে না পাওয়া গেলেও আমিরুলের বাড়িতে গেলে তার চাচা নওশের মোল্লা বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, আমি ভাতিজা যদি জড়িত থাকে তাহলে ওর যে শাস্তি হবে আমরা মেনে নেবো। আমার ভাতিজাকে পুলিশ ধরেও নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড মেম্বর শের আলম শের শাহ্’র সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তাৎক্ষণিক আবার বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সত্য নয়।
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি (তদন্ত) আবুর খায়ের এ প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে, এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানান।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply