সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। এতে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষ। প্রচন্ড শীতে হতদরিদ্রদের কিছুটা উষ্ণতা দিতে সারাদেশে কম্বলসহ অন্যান্য শীতবস্ত্র পাঠাচ্ছে সরকার। আর তা পেতে দীর্ঘদীন ধরে অপেক্ষা করছে অনেকে।
কিন্তু ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে শীতের শেষ মুহূর্তেও অনেক হতদরিদ্র শীতার্তদের কপালে এখনো জুটেনি এই শীতবস্ত্র।
ফলে হাড় কাঁপানো শীতে প্রতিদিন মানবেতর দিনযাপন করে চলেছেন উপজেলার অসহায় খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিক্সাচালকসহ নিন্ম আয়ের শ্রেনির পেশার মানুষগুলো।
২৬ জানুয়ারি বুধবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফাজেলখার ডাঙ্গী, বালিয়াডাঙ্গী(বড়), বালিয়া ডাঙ্গী (হিন্দু) ও আরশাদ মাতুব্বর ডাঙ্গী গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, অনেক দিনমজুর, রিক্সাচালক ও চা ব্যবসায়ী হতদরিদ্র পরিবারগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে বৃদ্ধ বাবা,মা ও ছোট ছোট শিশু বাচ্চাদের নিয়ে মানবেতর দিনযাপন করে চলেছেন।
উপজেলা সদর ইউনিয়নের বড় বালিয়া ডাঙ্গী গ্রামের বেড়িবাঁধ রাস্তার উপর বসবাসরত বিধবা রাজিয়া (৪৫) এক শীতার্ত জানান, শুনছি এর আগে এজাগা দিয়া কয়েকদিন আগে কারা যেন গাড়ি দিয়া কম্বল দিয়া গেছে, কিন্তু আমি ওই কম্বল দেওয়ার খবর জানিও নাই আর পাইও নাই।
ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রামের রিক্সাচালক শেখ সোলায়মান বলেন, গত বছর বিভিন্ন জায়গা থেকে দুই,একটা কম্বল পাইছিলাম। এবছর তো তাও পাইলাম না।
ঐদিন রাতে বালিয়া ডাঙ্গী (হিন্দু) গ্রামের বেড়িবাঁধে বসবাসরত দিনমজুর আজিজ খা(৪০) জানান, আমি “দিন আনি দিন খাই”। এই যে শীত গেলো এ পর্যন্ত আমাগো কেউ একটা কম্বল দিলোনা। বেড়িবাধে রাস্তার উপড় বউ পোলাপান নিয়া থাকতে শীতে অনেক কষ্ট হয় আমাগো।
এছাড়া বালিয়া ডাঙ্গী ও আরশাদমাতুব্বর ডাঙ্গী গ্রামের বেড়িবাধেঁ আশ্রয় নেয়া নদীভাঙ্গন কবলিত অনেক শীতার্ত পরিবারগুলোও উক্ত শীতবস্ত্র না পাওয়ায় এসময় আক্ষেপ করেন।
এদিকে, শীতবস্ত্র (কম্বল) না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চেয়ে, সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি’ সদস্য আলেপ মন্ডল ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি’ সদস্য বাবুল মোল্যাকে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তানজিলা কবির ত্রপা জানান, এ পর্যন্ত যতগুলো কম্বল এসেছে সবগুলো বিতরন করেছি।চরভদ্রাসনে দরিদ্র জনসংখ্যার তুলনায় কম্বল কম থাকায় অনেককেই হয়তো দেয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়,২০২১-২২ অর্থ বছরের এ বছরে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে দুই ধাপের প্রথম ধাপে ১,৮৮০টি এবং দ্বিতীয় ধাপে পাচঁ লক্ষ তিহাত্তুর হাজার টাকা দিয়ে ১,১০০টি কম্বল কেনা হয়। সর্বমোট ২,৯৮০টি কম্বল বিতরন করা হয়।
এর মধ্যে উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদে ৪৭৫টি, চরঝাউকান্দা ইউনিয়নে ৪০০টি, চরভদ্রাসনে ৫০০টি, এবং গাজিররটেক ইউনিয়নে ৫২৫টি সহ মোট ১,৯০০ কম্বল প্রদান করা হয়।বাকি ১,০৮০টি কম্বল উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা এবং উপজেলা চেয়ারম্যান বিতরন করেন।
Design & Developed By: JM IT SOLUTION
Leave a Reply